আমাদের সম্পর্কে | যোগাযোগ

০৮ সেপ্টেম্বর

২০২৪ রবিবার

নিউজ বুলেটিন: ঢাকার রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি ও অতিরিক্ত যানবাহন চলাচলে বাড়ছে বায়ুদূষণের মাত্রা।

ইত্তেফাক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২ জুলাই ২০২৪, ১৪:১৭

আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪, ১৪:১৭

৯৬

শেয়ার:

সিলেট অঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যার কারণ ও করণীয়

News

ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ প্রায়ই নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়। এগুলোর মধ্যে বন্যা উল্লেখযোগ্য। দুঃখ, দারিদ্র্য ও অভাবের মতো বন্যাও যেন এ দেশের মানুষের কাছে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় প্রতি বছরই বন্যার সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয় এ দেশের মানুষকে। বন্যা দাপটের বছর ১৯৫৪ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩২টি বড় ধরনের বন্যা আঘাত হেনেছে। এর মধ্যে ১৭টিকে মহাপ্রলয়ংকরী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা হয় ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালে। বিশেষভাবে সিলেট অঞ্চলে ১৯৯৯, ২০০৪, ২০০৭, ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালে উল্লেখযোগ্য বন্যা হয়।  তবে ২০২২ ও ২০২৪-এর বন্যা ব্যতিক্রম, ১২২ বছরের ইতিহাসে সিলেট ও সুনামগঞ্জে এমন বন্যা হয়নি। ২০২২-এ সিলেটের সঙ্গে সড়ক, রেল ও আকাশপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং ফসল ও মানুষের বাড়িঘর, রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, যা সরাসরি দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে অতিরিক্ত দাবদাহের সঙ্গে বন্যাও দেখা গেছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বৃষ্টিপ্রবণ এলাকা ভারতের চেরাপুঞ্জিতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেখানকার পানি সরাসরি বাংলাদেশের বিভিন্ন নদ-নদী এবং হাওরে এসে মিশে ভৈরবে মেঘনা হয়ে বঙ্গোপসাগরে চলে যাওয়ার কথা থাকলেও নানা কারণে তা বাধাগ্রস্ত হয়। বর্তমানে একদিন একটু ভারী বৃষ্টি হলেই ঐ পানি উজান থেকে আসা পানির সঙ্গে মিশে কুশিয়ারা ও সুরমা নদীর দুই কূল প্লাবিত করে পানি নগরসহ সিলেট বিভাগের একাধিক জেলায় প্রবেশ করে এবং রাতারাতি সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার অধিকাংশ এলাকা পানির নিচে চলে যায়।বন্যা ও আকস্মিক বন্যার কারণের সঙ্গে এই অঞ্চলের ভৌগোলিক অবস্থান ও গঠন, অমাবস্যা, পূর্ণিমা, বায়ুপ্রবাহের দিক ও নদী ব্যবস্থার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। বঙ্গোপসাগরের পরিপ্রেক্ষিতে ফানেল আকৃতির (Funnel Shape) বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, ভূপ্রাকৃতিক গঠন বন্যা ও বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার উল্লেখযোগ্য প্রধান কারণ। পদ্মা, মেঘনা, যমুনাসহ বিভিন্ন নদী বাংলাদেশকে আড়াআড়িভাবে অতিক্রম করে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। প্রধান এই তিনটি নদীর উৎস চীন, নেপাল, ভারত ও ভুটান। কিন্তু এসব নদীপ্রবাহের ৮০ শতাংশেরও বেশি পানি বাইরে থেকে আসে এবং বন্যার জন্য দায়ী ৯০ শতাংশ পানিই এই তিনটি নদী নিয়ে উজান থেকে আসে। এই তিনটি নদীর মোট অববাহিকা এলাকার পরিমাণ ১৫ লাখ ৫৪ হাজার বর্গকিলোমিটার, যার মাত্র ৭ শতাংশ এলাকা এ দেশে অবস্থিত। সিলেট অঞ্চলের নদ-নদীর উত্পত্তিস্থল ভারত হওয়ায় প্রতি বছর ক্যাচমেন্ট এলাকায় ভারী বৃষ্টির কারণে যে পাহাড়ি ঢলের সৃষ্টি হয়, এর সবই চলে আসে বৃহত্তর সিলেটে। এতে প্রচুর পরিমাণ পলিমাটিও বাংলাদেশে আসে। বাংলাদেশ নিরাপদ পানি আন্দোলনের (বানিপা) তথ্যমতে, ভারত থেকে প্রতি বছর ১.২-২.৪ বিলিয়ন টন পলি নদীবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বন্যার ফলে নদীর দুই কূল প্লাবিত হয়ে হাওরসহ নদীগুলোর তলদেশ পলি পড়ে ক্রমান্বয়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আগে এ ধরনের বন্যার পানি দ্রুত বৃদ্ধি ও হ্রাস পেত। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এই পানি দ্রুত নেমে না যাওয়ায় বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী বন্যা দেখা দিচ্ছে। তাই বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও এর মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস করার জন্য প্রয়োজন বিদ্যমান আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সাহায্য-সহযোগিতা জোরদার করা।

বিস্তারিত দেখুন সিলেট অঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যার কারণ ও করণীয়

ছবি: সংগৃহীত


সিলেট বন্যা

মন্তব্য করুন-